সোনারগাঁ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি প্রার্থী নেকবর হোসেন নাহিদের নারী কেলেঙ্কারি ঘটনা ফাঁস হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
সোনারগাঁ উপজেলায় ১৩ বছর দায়িত্বে থাকা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নেকবর হোসেন নাহিদ গত ১৭ জুলাই পুনরায় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলনে সভাপতি প্রার্থী হয়েছেন।
প্রায় ২০ বছর পর গত ১৭ জুলাই সোমবার শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে সংঘর্ষের আশঙ্কা থাকায় কমিটি ঘোষণা কেন্দ্রের নেতৃবৃন্দ জানায় পরবর্তীতে কমিটি ঘোষণা দেওয়া হবে। স্বেচ্ছাসেবক লীগের নতুন কমিটিতে সভাপতি প্রার্থী হয়েছেন নারী কেলেঙ্কারির সাথে জড়িত কর্মীশুন্য এই নেতা।
অনুসন্ধানী তথ্যে জানা যায়, দীর্ঘদিন যাবত এক ব্যবসায়ীর স্ত্রীর সাথে তার অবৈধ সম্পর্ক চলছিলো। এবং বিভিন্ন অসামাজিক কার্যকলাপেও লিপ্ত হয়েছে বলেও জানাগেছে। যার ফলশ্রুতিতে ওই নারীর সংসার জীবনে নেমে আসে অশান্তির ঝড়। ইতোমধ্যেই তাদের একটি যুগল বন্দি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ছবিতে দেখা যায় একটি দর্শনীয় স্থানে দাঁড়িয়ে তিনি ওই নারীকে বুকে জড়িয়ে রেখেছেন। এ যেন "মনের মাঝে তুমি" সিনেমাকেও হাড় মানিয়েছে নেকবর হোসেন নাহিদ।
সোনারগাঁ আওয়ামীলীগের একাধিক রাজনৈতিক ব্যক্তিরা জানান, কর্মীশুন্য নেতা নেকবর হোসেন নাহিদের জীবনে রাজনীতিতে পথ চলা শুরু হয় ১৯৮৯/৯০ সালে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সফল ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান উপজেলা আওয়ামীলীগের ১নং সদস্য মাহফুজুর রহমান কালামের হাত ধরে। কালাম তাকে তৎকালিন উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতা আবুল হাসনাতের গার্মেন্টসে চাকরির সুযোগ করে দেন, সেখানে অনৈতিক কারনে তার চাকরি চলে যাওয়ার পর সে হাসনাত ফ্যামিলির একজন মোশারফের ঘাড়ে সওয়ার হয়। মোশারফের ঘাড়ে সওয়ার হওয়ার পর কায়সার হাসনাত এবং মোশারফ যখন বহিষ্কার হলেন তখন সে বাহাউল হকের রাজনীতিতে আমদানি হয় এই নেতা। বাহাউল হকের সওয়ার হয়ে ২০০১ এর পরে প্রথম স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ পান। বাহাউল হক মনোনয়ন না পেলে ২০০৮ সালে যখন কায়সার হাসনাত এমপি হলেন সে কায়সার হাসনাত লোক বনে গেলেন। কায়সার হাসনাতের লোক বনে যাওয়ার পরে ২০১৪ সালে যখন কায়সার হাসনাত মনোনয়ন পেলেননা তখন আস্তে আস্তে উনি আবার রাজনীতিতে আবু জাফর বিরুর ঘাড়ে সওয়ার হলেন। বিরুর ঘাড় থেকে এখন আবার পূনরায় সামসুল ইসলাম ভূইয়া যেহেতু উপজেলা চেয়ারম্যান তার ঘাড়ে সওয়ার হয়ে সোনারগাঁয়ে টিকে রয়েছেন।
একারণেই কর্মীশুন্য ও নারী কেলেঙ্কারির সাথে জড়িত এই নেতা সোনারগাঁয়ের রাজনীতিতে গাছ বাওয়া বানর হিসেবে পুরো উপজেলায় পরিচিত।
সোনারগাঁ আওয়ামীলীগের একাধিক নেতৃবৃন্দ বলেন, নেকবর হোসেন নাহিদের কোন ইনকাম সোর্স নেই। যার কারনে তিনি যখন যার সাথেই রাজনীতি করেন তখন তিনি তার কাছে-থেকে প্রতি মাসে বেতন নির্ধারণ করে চলেন।
সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামীলীগের তৃণমূল নেতাকর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এ রকম একজন নারী লোভী লোকের হাতে নেতৃত্ব গেলে সোনারগাঁ স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে যাবে। যিনি জীবনে কখনো কোন মিটিং অথবা জনসভায় ২০/২৫ জনের একটা মিছিল নিয়ে অংশগ্রহণ করতে পারেনি। তার মতো মানুষের হাতে নেতৃত্ব দেয়া মানে সোনারগাঁ স্বেচ্ছাসেবক লীগকে গলা টিপে হত্যা করা।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত নেকবর হোসেন নাহিদকে মুঠোফোনে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, একটি কুচক্রী মহল আমার সম্মান নষ্ট করার কাজে লিপ্ত রয়েছে।মেয়েটি আমাদের এলাকার এক ব্যবসায়ীর স্ত্রী। ভাইরাল হওয়া ছবিটি সম্পূর্ণ ফেইক ও বানানো। বিষয়টি নিয়ে অনেকেই আমাকে জিজ্ঞেস করছেন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন