নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে অবস্থিত বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের কারুপল্লীতে কারুশিল্পীদের তাদের কারুপণ্য বিপণনের জন্য বরাদ্দকৃত স্টল পেতে মামলা করে নিঃস্ব হওয়ার পথে ১৩ কারুশিল্পী।
কারুশিল্পীদের অভিযোগ, তাদের ন্যায্য দাবি আদায়ের জন্য লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে লাখ লাখ টাকা খরচ করে পথে বসার অবস্থা হয়েছে।
কারুশিল্পীরা তাদের নিপুণ হাতের তৈরি কারুপণ্য বিক্রি করে কোনোমতে সংসার চালাতে হচ্ছে। এর উপর মামলার অতিরিক্ত খরচ। ফলে দিন দিন নিঃস্ব হয়ে পড়ছেন তারা। বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনে বর্তমানে ৮টি স্টল রয়েছে। এ স্টল গত বছরের মার্চ মাসে কয়েকটি স্টল ভেঙে ফেলা হয়। এতে করে তাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। তাদের এ স্টল বরাদ্দের জন্য উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন দায়ের করেছেন কারুশিল্পীরা।
২০২১ সালের ২২ ফেব্রুয়ারী হাইকোর্টের বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর বেঞ্চে ১৩ জন কারুশিল্পীদের পক্ষে কারুশিল্পী সেলিনা আক্তার বাদী হয়ে এ পিটিশন দায়ের করেন। রিট পিটিশনে বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের পরিচালক ও রেজিস্ট্রেশন কর্মকর্তাকে বিবাদী করা হয়। আদালতে রিট পিটিশন দায়েরের পরও ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষ কারুশিল্পীদের দোকান ভেঙে দেন।
জানা যায়, বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের অভ্যন্তরে কারুশিল্পীদের কারুপন্য বিপণনের জন্য ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষ কারুপল্লী স্থাপন করেন। ওই মার্কেটে ৩৫টি স্টল ছিল। মার্কেটটি জরাজীর্ণ হওয়ার কারনে ২০১২ সালে পুনরায় সংস্কার করে ৪৮টি দোকান তৈরি করে কারুশিল্পীদের মধ্যে বরাদ্দ দেন। এ ৪৮টি দোকান থেকে ২০ জন প্রকৃত কারুশিল্পী দোকান বরাদ্দ থেকে বঞ্চিত হন। এ দোকান বরাদ্দ না পেয়ে কারুশিল্পীরা ২০১৩ সালে একটি রিট পিটিশন দায়ের করেন। পরবর্তীতে ২০২০ সালের ৪ ফেব্রুয়ারী রিটে কারুশিল্পীদের পক্ষে আদালত রায় প্রদান করেন। ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষ ২০ জন কারুশিল্পীদের দোকান বরাদ্দ দিয়ে ২৮টি দোকান থেকে পুনরায় ১৩ জন কারুশিল্পীর দোকান বরাদ্দ দিতে তালবাহানা শুরু করে। ফলে ১৩ জন কারুশিল্পীদের পক্ষে সেলিনা আক্তার বাদী হয়ে এ রিট পিটিশন দায়ের করেন। উচ্চ আদালতে পিটিশন দায়ের করেন, সেলিনা আক্তার, মো. হাবিবুর রহমান ডালিম, সামসুন্নাহার, মো. রায়হান, মো. জাহাঙ্গির আলম, মনিরুজ্জামান মনির, আছমা বেগম, মো. হাবিবুর রহমান, রুবিনা আক্তার, মো. সালাউদ্দিন, মো. আনোয়ারুজ্জামান, নারগিস আক্তার ও মোহাম্মদ আলাউদ্দিন। আদালতকে উপেক্ষা করে ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষ কারুশিল্পীদের দোকান ভেঙে দেন।
কারুশিল্পী হাবিবুর রহমান ডালিম জানান, ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষ দু'দফায় আমাদের দোকান বরাদ্দ দিয়েছেন। ওই দোকান আমাদের বুঝিয়ে দেননি। বিষয়টি মীমাংসার জন্য উচ্চ আদালতের গিয়েছি।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন