SS TV live
SS News
wb_sunny

Breaking News

ডুবে যাওয়া লঞ্চ থেকে ২৮ জনের লাশ উদ্ধার, অভিযান সমাপ্ত

 


 নারায়নগঞ্জের বন্দর উপজেলার মদনগঞ্জ এলাকায় কার্গোর ধাক্কায় ডুবে যাওয়া লঞ্চ থেকে ২৮ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। 

পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, কোস্ট গার্ড ও নৌ বাহিনীর সম্মিলিতভাবে ১৯ ঘণ্টার  উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষনা করেছেন জেলা প্রশাসন।

নিহত প্রত্যেক পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা করে প্রাথমিক অনুদান প্রদান করছে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন।


শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানের ১৮ ঘন্টার পর  শীতলক্ষ্যায় জাহাজের ধাক্কায় ডুবে যাওয়া যাত্রীবাহী লঞ্চটি উদ্ধার করেছে উদ্ধারকারী জাহাজ প্রত্যয় ৷


তাৎক্ষণিকভাবে নিহত ২৮ জনের পরিচয় জানা যায়নি। নিহতদের পরিচয় শনােক্তের পর ধারাবাহিকভাবে ফায়ার সার্ভিসের মাধ্যমে মরদেহগুলো পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছে।


লঞ্চ দুর্ঘটনার পর পরই রোববার সন্ধ্যায় ৫ নারীর লাশ উদ্ধারের পর সোমবার (৫ এপ্রিল) সকাল সাড়ে দশটার দিকে পুনরায় লঞ্চ উদ্ধারের কাজ শুরু হয়৷ এ সময় নিখোঁজ ছিলো আরও ২৭ যাত্রী৷


 এর আগে রোরবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে শীতলক্ষ্যা নদীর ঘটনাস্থলে পৌছায় প্রত্যয় ৷ রাতভর নিখোঁজ যাত্রীদের উদ্ধার কাজ চলায় সেখানেই নোঙর করা ছিল উদ্ধারকারী জাহাজটি৷


গতকাল রোববার (৪ এপ্রিল) সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার দিকে সদর উপজেলার চর সৈয়দপুর এলাকায় একটি কোস্টার জাহাজের ধাক্কায় লঞ্চটি ডুবে যায়। লঞ্চে অর্ধশতাধিক যাত্রী ছিল৷ রাতেই ২৯ জন সাঁতরে তীরে ওঠেন৷ লঞ্চ ও নিখোঁজ ব্যক্তিদের উদ্ধারে কাজ করছে বিআইডব্লিউটিএ, কোস্টগার্ড, দমকল বাহিনী, নৌ ও থানা পুলিশের উদ্ধারকর্মীরা৷


নিহতরা হলেন—মুন্সীগঞ্জের সদর উপজেলার রুনা আক্তার (২৪), সদর উপজেলার চৌহদ্দামোড় এলাকার সোলায়মান (৬০), বেবী বেগম (৬০), সুনিতা সাহা (৪০), পাখনা (৪৫), বীথি (১৮), আরিফা (১), প্রতিমা শর্মা (৫৩), শামসুদ্দিন (৯০), রেহেনা বেগম (৬৫),  হাফিজুর রহমান (২৪), তাহমিনা বেগম (২০), নারায়ণ দাস (৬৫), পারবতী রানী দাস (৪৫), আজমীর (২), শাহ আলম মৃধা (৫৫), মহারানী (৩৭), আনোয়ার হোসেন (৫৫), মাকসুদা বেগম (৩০), ছাউদা আক্তার লতা (১৮), আব্দুল খালেক (৭০), জবু (১৩), খাদিজা বেগম (৫৩), মো. নয়ন (২৮), সখিনা বেগম (৪৫), সাদিয়া (১১) ও মানসুরা (৭)। একজনের লাশ এখনও শনাক্ত করা যায়নি৷


নারায়ণগঞ্জ নৌ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহিদুল আলম জানান, চর সৈয়দপুর এলাকায় শীতলক্ষ্যায় নির্মাণাধীন সেতুর কাছাকাছি স্থানে এ ঘটনা ঘটে। একটি কোস্টার জাহাজের ধাক্কায় এম এল সাবিত আল হাসান নামের লঞ্চটি ডুবে যায৷ নারায়ণগঞ্জ থেকে মুন্সিগঞ্জের দিকে রওয়ানা হয়েছিল ডুবে যাওয়া লঞ্চটি।


ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী শীতলক্ষ্যা নদীর উপর নির্মাণাধীন তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতুর ১৬ নম্বর পিলারের নিরাপত্তকর্মী মোহাম্মদ হালিম৷ তিনি বলেন, এসকেএল-৩ (এম: ০১২৬৪৩) নামের একটি কোস্টার জাহাজ পেছন থেকে ধাক্কা দিয়ে অন্তত ২০০ মিটার লঞ্চটিকে টেনে নিয়ে যায়৷ এরপর লঞ্চটি যাত্রীসহ ডুবে যায়৷


বন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শুক্লা সরকার বলেন, শীতলক্ষ্যা নদীর পূর্ব পাশের বন্দর উপজেলার মদনগঞ্জ ঘাট দিয়ে ১৩ জন যাত্রী সাঁতরে উঠেছেন৷ পশ্চিম পাশের ঘাট দিয়ে আরও ১৬ জন জীবিত অবস্থায় উঠেছেন৷ পাঁচজন নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে৷


নারায়ণগঞ্জ জেলা লঞ্চ মালিক সমিতির সহসভাপতি মনিরুজ্জামান রাজা জানান, লঞ্চটিতে অন্তত ৫০ জন যাত্রী ছিল৷ সন্ধ্যা ৫টা ৫৬ মিনিটে নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় লঞ্চঘাট থেকে ছেড়ে যাওয়া লঞ্চটি আনুমানিক সোয়া ছয়টার দিকে দুর্ঘটার কবলে পড়ে৷ এসকেএল-৩ নামক একটি কোস্টার জাহাজ পেছন থেকে লঞ্চটিতে ধাক্কা দেয়৷


ডুবে যাওয়া লঞ্চটির মালিকের নাম আলাল হোসেন৷ তিনি মুন্সিগঞ্জের বাসিন্দা বলে জানান লঞ্চ মালিক সমিতির সহসভাপতি মনিরুজ্জামান৷ তিনি বলেন, এই রুটে ২৫টি যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল করে৷ আমাদের যাত্রীবাহী লঞ্চগুলোর আয়তন ছোট৷ কোস্টার জাহাজগুলো এই রুটে বেপরোয়াভাবে চলাচল করে৷ বারবার বলার পরও তারা কোনো সমঝোতা করে চলাচল করে না৷ কোস্টার জাহাজগুলো যেন নিয়ম মেনে যেন চলাচল করে এ দাবি তোলেন তিনি৷


লঞ্চের যাত্রী ছিলেন মুন্সিগঞ্জ সদরের মাটহাটি এলাকার বাসিন্দা মোবারক মাদবর (৪৭) জানান, বড় একটি জাহাজের সাথে ধাক্কা লেগে অর্ধশতাধিক যাত্রীসহ লঞ্চটি ডুবে যায়৷ তিনি সাতরে তীরে ফিরতে পেরেছেন৷ তবে বাকিদের কোনো খবর তিনি দিতে পারেননি৷

Tags

সাবসক্রাইব করুন!

সবার আগে নিউজ পেতে সাবসক্রাইব করুন!

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন