মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী জনাব আ. ক. ম. মোজাম্মেল হক এমপি বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধ শুরু পূর্বে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ হয়েছিল '৭১- এর ১৯ মার্চ গাজীপুরে। স্বাধীনতার আনুষ্ঠানিক ঘোষণার পূর্বে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনায় এ প্রতিরোধ যুদ্ধ মুক্তিকামী বাঙালি জাতিকে অনুপ্রাণিত করেছিল। ইতিহাসের স্বার্থে ১৯ মার্চের প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেয়া প্রয়োজন ।
আজ ঢাকায় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও ১৫ ডিসেম্বর গাজীপুর মুক্ত দিবস উপলক্ষে "ঊনিশে মার্চ প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ দিবস সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটি" আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
এসময় পৃথিবীর সকল মুসলিম প্রধান দেশে ভাস্কর্য আছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে অনেক আগে থেকেই ভাস্কর্য আছে। গাজীপুরেও প্রথম প্রতিরোধের ভাস্কর্য ১৯৭২ সাল থেকে আছে। সেসব ভাস্কর্য নিয়ে কখনও কেউ কিছু বলেনি, কিন্তু জাতির পিতার ভাস্কর্য নিয়ে তারা কথা বলার ধৃষ্টতা দেখায়।
বিজয়ের এত বছর পর সাম্প্রদায়িক শক্তির আস্ফালন দুঃখজনক উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, যারা আজ ধর্মের নাম করে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে যে ধৃষ্টতাপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছে এরাই ' ৫২ এর ভাষা আন্দোলন, '৫৪ ও '৭০ এর নির্বাচন এবং ১৯৭১এর মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলা ভাষা, বাঙালি জাতিসত্তা ও বাঙালির ন্যায়সঙ্গত অধিকারকে ইসলামের প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করিয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী বাঙালি জাতি এসব ধর্ম ব্যবসায়ীদের মুখোশ উন্মোচন করে প্রতিহত করবে বলে মন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন।
সভায় ২০২১ সালে ১৯ মার্চ প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ দিবস সুবর্ণজয়ন্ত্রী উদযাপন বিষয়ে বিস্তাারিত আলোচনা হয়।
সংগঠনের সমন্বয়কারী সাংবাদিক আতাউর রহমানের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন শামসুন নাহার ভুইয়া এমপি, সাবেক সংসদ সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা কাজী মোজাম্মেল হক, বীর মুক্তিযোদ্ধা, আনোয়ার হোসেন অধ্যাপক এম.এ.বারী, গাজীপুর সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এডভোকেট রীনা পারভীন, সিনিয়র সাংবাদিক ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সদস্য আশরাফ খান ও সাংবাদিক আশিষ সৈকত, সাংবাদিক মোহাম্মদ আল মামুন, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর আবদুল আলীম মোল্লা, বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের সভাপতি ও পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদের যুগ্ম মহাসচিব মোহাম্মদ আলী চৌধুরী মানিক, আওয়ামী লীগ নেতা মো.শহীদুল্লাহ , বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. জালাল আহমদ, বঙ্গবন্ধু গবেষণা পরিষদের সভাপতি লায়ন গণি মিয়া বাবুল, গাজীপুর সাংবাদিক ইউনিয়নের সহসভাপতি এম এ সালাম শান্ত ও সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
সভায় নেতৃবৃন্দ বলেন, ১৯৭১ সালের ১৯ মার্চ সশস্ত্র প্রতিরোধ যুদ্ধের মাধ্যমে যুদ্ধ শুরু হয়েছিল গাজীপুর থেকে। আবার ১৯৭১ সালের ১৫ ডিসেম্বর সর্বশেষ যুদ্ধ হয়েছিল এই গাজীপুরের ছয়দানাসহ বিভিন্ন এলাকায়। ৭ মার্চের ভাষণ এবং ১৯ মার্চ সশস্ত্র প্রতিরোধ যুদ্ধ এবং যুদ্ধকালীন সময়ে গাজীপুরের বিভিন্ন স্থানে পাকবাহীনির সাথে যে যুদ্ধ হয়েছিল তার ঘটনা পুস্তিকা আকারে প্রকাশ করা উচিত। ১৯ মার্চকে স্বীকৃতি দিলে ইতিহাস তার সঠিক অবস্থানে থাকবে। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চ স্বাধীনতার মূল ভাষণ হিসেবে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি পেয়েছে। ইতিহাসের স্বার্থে ১৯ মার্চে সশস্ত্র প্রতিরোধের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেয়া প্রয়োজন ।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন