মাজহারুল রাসেল : মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আত্মীয়ের কবরে নিজের আপন বোনকে কবর দেওয়ার প্রসঙ্গে ব্যাখ্যা দিয়েছেন নাারয়ণগঞ্জে-৩ (সোনারগাঁও) আসনের সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা।
এ বিষয়টি নিয়ে গত কয়েকদিন বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচার হচ্ছিল। শুধু তাই নয় এ বিষয়ে সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভীর বক্তব্যও সাংসদের দৃষ্টি গোচর হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা বলেন, করোনায় আক্রান্ত তার বড় বোন খালেদা খানম ডলি গত ১৭ নভেম্বর রাত সাড়ে ১১টায় ঢাকার আজগর আলী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু বরণ করেন। করোনা পজিটিভ হওয়ায় চিকিৎসকদের পরামর্শ ছিল যেন রাতেই লাশটি দাফন করা হয়।
সে লক্ষে আমার ভাগ্নে ফয়সাল মাসদাইর কবরস্থানে গেলে সেখানে দায়িত্বরতরা জানায় সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞার কারণে রাতের বেলা লাশ দাফন কার্যক্রম বন্ধ। এখবর পেয়ে আমি (এমপি) রাতেই কবরস্থানে গিয়ে সেখানে দায়িত্বরতদের জানাই যে, আমার বোন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বরণ করেছে।
তাই রাতের মধ্যেই তার মরদেহ দাফন সম্পন্ন করা জরুরি একথা জানিয়ে রাতেই দাফন করার ব্যবস্থা করতে অনুরোধ করি এবং বলি প্রয়োজনে এ ব্যাপারে আমি মেয়রের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলবো। কিন্তু তখন রাত আড়াইটা বেজে যাওয়ায় ওই সময় মেয়রকে টেলিফোন করা সমীচিন মনে করিনি। মানবিক দৃষ্টিকোন থেকে কবরস্থানের দায়িত্বপ্রাপ্তরা রাতেই দাফনের ব্যবস্থা করেন।
লিয়াকত হোসেন খোকা আরও জানান, কোথায় কবর দেওয়া হবে সেটি নির্বাচনের বিষয়ে কিছু দ্বিধাদ্বন্দ্ব ছিল। যে কবরে তাকে সমাহিত করা নিয়ে বির্তক দেখা দিয়েছে সেখানে অতীতে আমার মামা মরহুম মনসুর আহমেদকে সমাহিত করা হয়েছিল। কিন্তু আমার মরহুম বোন খালেদা খানম ডলির ইচ্ছা ছিল যে আমার বাবা মরহুম আইয়ূব আলীর কবরে যেন তাকে সমাহিত করি।
আমার বোনকে যেখানে সমাহিত করা হয়েছে আমার বাবার কবরটি সেই কবরটির ঠিক পেছনেই অবস্থিত। কিন্তু আমার বাবার কবরে আমার অপর এক বোনের শ্বশুরকে কবর দেওয়া হয় এবং পরে আমার বোনের শ্বশুর বাড়ির লোকজন কবরের জমিটি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ক্রয় করে নেয়। আমার বোনকে ওই কবরে সমাহিত করার ইচ্ছা প্রকাশ করে বোনের শশুর বাড়ির লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা আপত্তি জানায়। পরে ওই কবরের সামনে থাকা কবর (প্রধানমন্ত্রীর আত্মীয় ডা. শেখ ইসরাইল হকেরও কবর) যেখানে আমার মামা মরহুম মনসুর আহমেদকে ইতিপূর্বে সমাহিত করা হয়েছিল সেখানে কবরস্থ করার জন্য আমার মামাতো ভাই শহিদুর রহমান প্রস্তাব করলে আমরা তা গ্রহণ করি। এরপরেই আমি কবরস্থান থেকে চলে আসি। পরবর্তীতে আমার ভাগ্নে ফয়সালসহ পরিবারের অন্যরা কবর খোঁড়া ও লাশ দাফনের ব্যবস্থা করে।
সাংসদের ভাগ্নে প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা আলী আহম্মেদ ভূইয়া বাবুলের ছেলে ফয়সাল বলেন, যে কবরে আমার মা’কে কবরস্থ করা হয় একই কবরে ডা. শেখ ইসরাইল হক নামে একজন মৃত ব্যক্তির সাইনবোর্ড ছিল। কিন্তু ওই কবরটি সিটি কপোরেশন থেকে ক্রয় করা এ বিষয়টি সাইনবোর্ডে উল্লেখ ছিল না বা আমাদেরও জানা ছিল না। যে কারণে আমরা আমাদের আত্মীয়ের কবর মনে করেই একই কবরে আমার মাকে সমাহিত করি।
কিন্তু পরে দেখা গেলো এ নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। বির্তক দেখা দেওয়ার পর এ বিষয়ে আমি এবং আমার মামা সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা মরহুম ডা. শেখ ইসরাইল হকের পরিবারের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলে তাদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করি। মরহুমের পরিবারের সদস্যরাও বিষয়টি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে নিয়ে আমাদের অনিচ্ছাকৃত ভুলকে ক্ষমা করে দেন। এ ব্যাপারে মরহুমের পরিবারের পক্ষ থেকে আর কোন অভিযোগ বা অনুযোগ নেই। তাই এ বিষয়টি নিয়ে আর কোন ভুল বোঝাবুঝি নেই বলেই আমরা মনে করি।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন