নারায়ণগঞ্জ সোনারগাঁও প্রতিনিধিঃ
নারায়গঞ্জের সোনারগাঁওয়ে উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের নয়াগাঁও গ্রামের কয়েক হাজার পরিবার ভূমিগ্রাসী, সন্ত্রাসী, অত্যাচার নিপীড়নে পরিবার জিম্মিদশা নিয়ে জীবনযাপন করছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় ভুক্তভোগীরা। প্রায়ই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে এই গ্রামে। উপজেলার নয়াগাঁও গ্রামের ভূমিদস্যু মৃত আব্দুল মালেকের ছেলে হাজী আলাউদ্দিন বাহিনীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে এলাকার সাধারণ মানুষ। সরকারি জমি দখল , জালিয়াতি করে অন্যের জমি জোরপূর্বক, এলাকায় চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন কর্মকান্ডে সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত এ বাহিনী। বাহিনী প্রধানের নির্দেশেই সার্বিক তদারকিতে জোরপূর্বক জায়গা দখল কাজ করে থাকে তাঁর অন্যান্য সহযোগীরা।
জানাযায়, প্রতিবন্ধি শাহাবুদ্দিন, মমতা, সেলিনা ও নুরুতুনসহ এই গ্রামের ভূমিহীনরা এক খন্ড ভূমি বরাদ্দের আবেদন করেছেন উপজেলা নির্বাহীকর্মকর্তা বরাবর। অপর দিকে ভূমিদস্যুরা কোম্পানির দালালি আর সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে রীতিমত আঙ্গূল ফুলে কলাগাছ হয়েছেন ভূমিদস্যু হাজী আলাউদ্দিন।
এই এলাকায় দ্রুত শিল্পায়নের কারনে বদলে যাচ্ছে এই গ্রামের ভৌত অবকাঠামো। প্রধান পেশা ছেড়ে বেকার হচ্ছেন কৃষকরা। কেউবা বেছে নিচ্ছেন গার্মেন্টসের চাকরিসহ অন্য পেশায় জড়িয়ে পড়ছেন।
সর্বশেষ গত শনিবার একই এলাকার প্রবাসী শাহাবুদ্দিনের জায়গা জোরপূর্বক দখল করতে গেলে বাঁধা দিলে ছয়জনকে কুপিয়ে আহত করে ও লুটপাট করার মতো ঘটনাও ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
সরেজমিনে দেখাযায়, ইউনিক পাওয়ার প্লান্ট, চিটাগাং বিল্ডার্স, সনি এস আর, কনকর্ড, এ প্লাস এগ্রোফার্ম, হামদার্দসহ বহু বড় বড় শিল্প গড়ে উঠছে এ লাকার পিরোজপুর ও দুধঘটা মৌজায়। যার বেশিরভাগই গড়ে উঠেছে নদীর খাস জায়গা দখল করে এবং দরিদ্র কৃষকের জমি নাম মাত্র মুল্যে ক্রয় করে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অনেকটা চাপের মুখে নিজেদের কৃষি জমি বা বসতবাড়ি কোম্পানির কাছে ছেড়ে দিয়েছেন এই গ্রামের মানুষ। অনেকের যায়গা না কিনেই বালি ভরাট করেছে ভূমিদস্যুরা। এ নিয়ে থানায় অভিযোগ আছে একাধিক। ভূমিদস্যুদ হাজি আলাউদ্দিনেরআতঙ্কে ভুক্তভোগীরা ভয়ে মুখ খুলতে পারছেন। এভাবেই দিন দিন ভুমিহীন হচ্ছেন নিরীহ মানুষ। অনেকেই আবার প্রতিবাদ করতে গিয়ে হামলার শিকার হচ্ছেন, ঘটছে মামলা ও হত্যার মতো ঘটনা।
উপজেলা কৃষি ও ভূমি অফিসের দেয়া হিসেব মতে, গত ৫ বছরে এই এলাকার কৃষি জমি কমেছে অন্তত ৯০ ভাগ। বাকি ১০ ভাগ এখন অনাবাদি। এই গ্রামের মানুষদের আদি পেশা কৃষি কাজ, মৎস্য শিকার বদলে গিয়ে অনেকেই প্রবাসী হয়েছেন।
বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের নজর এখন পিরোজপুর মৌজার ছোট গ্রাম নয়াগাঁওয়ে। নদী দখল, শত শত বিঘা সাধারন মানুষের কৃষি জমি, বাড়িঘর দখলের মহোৎসব চলে এই গ্রামে।এইকাজে সহযোগিতা করে স্থানীয় দালাল আর রাজনৈতিক প্রভাবশালীরা।
সাধারন মানুষের বাড়ী ঘর, কৃষি জমি দখলের অভিযোগ নিয়ে নানা সময় সংবাদ প্রকাশ হয়েছে গণমাধ্যমে। তবে কাজের কাজ হয়নি কিছুই। তাঁদের দখলদারিত্ব মারামারি চলছে যথারীতি। তাঁদের এই অপকর্মের মদদদাতা স্থানীয় রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের বলে মনে করেন স্থানীয় সচেতন মহল।
সোনারগাঁও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ রফিকুল ইসলামের সাথে জমি দখলের ঘটনা জানতে চাইলে বলেন, জোরপূর্বক জমি দখলের অভিযোগ পেয়েছি তদন্তের মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন