SS TV live
SS News
wb_sunny

Breaking News

শেখ হাসিনার কৌশলী নেতৃত্বেই করোনা মোকাবেলায় সফল বাংলাদেশ।

সোনারগাঁও সময়ঃ করোনায় সারাবিশ্বে কোনো দেশের অবস্থা এখন ভালো অবস্থানে নেই। বিশ্বের উন্নত দেশগুলো আজ হার মেনে নিয়েছে এই মহামারির কাছে। সেই দিক দিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান কোথাই গিয়ে দাঁড়ানোর কথা তার কোনো হিসাব নেই। কারণ বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর মানুষ অনেক সচেতন। তারা যেভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে বাংলাদেশের মানুষ সেভাবে মেনে চলে না, তাছাড়া তারা অনেক সচেতন, যা আমরা না। দেশের মানুষের জন্য যতই স্বাস্থ্যবিধির আইন তৈরি করে তারা কোনোভাবেই সে আইন তোয়াক্কা করে না। তারপরেও এমন পরিস্থিতিতে দেশে করোনা সংক্রমণের শুরু থেকেই মহামারি মোকাবেলায় বেশ কৌশলী অবস্থান গ্রহণ করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।করোনা পরিস্থিতির শুরু থেকে সরকার প্রধান হিসেবে শেখ হাসিনা সামনে থেকে করোনা মোকাবেলায় নেতৃত্ব দিয়ে চলেছেন। জীবন-জীবিকা সচল রেখে করোনা মোকাবেলায় এক অনন্য নজির স্থাপন করেছেন তিনি।

একই সময়ে বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে করোনা চিকিৎসায় উদ্বুদ্ধ করে দ্রুতগতিতে মহামারি নিয়ন্ত্রণে সক্ষম হয়েছেন। করোনা পরিস্থিতির শুরু থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সমালোচনা, বিভিন্ন ষড়যন্ত্র, চক্রান্ত মোকাবেলা করে প্রধানমন্ত্রীর সুচিন্তিত পদক্ষেপে করোনা চিকিৎসা অনেকটা সফলতায় আসে।

যেখানে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইতালি, ভারতসহ অনেক উন্নত দেশ করোনা মোকাবেলায় হিমশিম খাচ্ছে, সেখানে বাংলাদেশ সফলতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত। শুরুর দিকে অনেক বিদেশি ভয়ে বাংলাদেশ ছেড়ে চলে গেলেও এখন তারা ফিরছেন। কেননা বাংলাদেশ যেভাবে করোনা মোকাবেলা করেছে, উন্নত দেশও তা পারেনি। আমেরিকা, ভারতে এখনো করোনা নিয়ন্ত্রণের বাইরে। আর সেদিক দিয়ে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে।

দেশের মানুষের জীবিকা নির্বাহের একমাত্র পথ অর্থনীতি। যার কারণে করোনার এমন পরিস্থিতিতে দেশের সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনা শুরু থেকেই চিকিৎসার পাশাপাশি জীবিকার তাগিদকে গুরুত্ব দেন। যে কারণে কিছুদিনের মধ্যেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে খুলে দেওয়া হয় গার্মেন্টস। নির্দিষ্ট সময়ের জন্য খোলা রাখা হয় দোকানপাট। যাতে দরিদ্র, মধ্যবিত্ত ও খেটে খাওয়া মানুষের আয় রুজির ব্যবস্থা হয়। সচল থাকে অর্থনীতির চাকা। একইসঙ্গে দেশব্যাপী দরিদ্রদের মধ্যে খাদ্যদ্রব্য ও নগদ অর্থ বিতরণের ফলে মানুষের খাদ্যের সংস্থান করা হয়। 

এ ছাড়া গার্মেন্টসহ শিল্পে প্রণোদনা দিয়ে শিল্পোন্নয়নে সহায়তা করা হয়। যাতে কিছুদিনের মধ্যেই অর্থনীতিতে বেশ গতি আসে। করোনা সংক্রমণ শুরুর পর জনজীবনে স্থবিরতা নেমে আসে। বিপাকে পড়ে খেটে খাওয়া জনগণ। ঠিক সেই সময়ে জনগণের পাশে ত্রাণকর্তা হিসেবে দাঁড়ান শেখ হাসিনা। গত ৫ এপ্রিল করোনাভাইরাসের আর্থিক ক্ষতি কাটাতে ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার প্রণোদনা ঘোষণা করেন তিনি।

এর মধ্যে শিল্পঋণের জন্য ৩০ হাজার কোটি টাকা, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতের ২০ হাজার কোটি টাকা, রফতানিমুখী শিল্পের শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধে পাঁচ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়। পাশাপাশি নিম্ন আয়ের মানুষ ও কৃষকের জন্য পাঁচ হাজার কোটি টাকা, রফতানি উন্নয়ন ফান্ড ১২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা, প্রিশিপমেন্ট ঋণ পাঁচ হাজার কোটি টাকা, গরিব মানুষের নগদ সহায়তা ৭৬১ কোটি টাকা, অতিরিক্ত ৫০ লাখ পরিবারকে ১০ টাকা কেজিতে চাল দেয়ার জন্য ৮৭৫ কোটি টাকা।

এ ছাড়া করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় স্বাস্থ্য খাতে বাজেটের অতিরিক্ত ৪০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। করোনা সংক্রমণের শুরু দিকে যখন সারা বিশ্ব দিশেহারা ঠিক ওই মুহূর্তে মাথা ঠাণ্ডা রেখে সংকট মোকাবেলায় মনোনিবেশ করেন প্রধানমন্ত্রী। শুরুর দিকে স্বাস্থ্য খাতের বিভিন্ন ধরনের বিশৃঙ্খলা প্রকাশ পেতে থাকে। সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন হাসপাতালে নিম্নমানের মাস্ক, পিপিই সরবরাহ ধরা পড়ে। এ ছাড়া আরও নানা ধরনের অসংগতি ফুটে ওঠে। সেসব অসংগতিগুলো শুধরে নিতে কড়া বার্তা দেন প্রধানমন্ত্রী। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব আসাদুল ইসলামকে সরিয়ে মন্ত্রণালয়কে ঢেলে সাজানো হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজির বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠলে ওই পদে নতুন কর্মকর্তাকে নিয়োগ দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে রদবদল করা হয়। করোনাকালে যাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ এসেছিল— তাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়ায় সরকারের ভাবমূর্তিকে উজ্জ্বল করেছেন তিনি। এতে সাধারণ মানুষের হৃদয়ে আস্থার প্রতীক হিসেবে তিনি স্থান করে নিয়েছেন আবারও। শুধু তাই নয় বর্তমানে সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা জেকেজির সাবরিনা- আরিফ ও শাহেদের মত দেশদ্রোহীতে ঘায়েল করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক অনন্য নজীর স্থাপন করেছেন। যেখানেই অন্যায় সেখানেই এখন অভিযান চালানো হচ্ছে। অপরাধিদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে শেখ হাসিনা। সে কোন দল করে সেদিক বিবেচনা না করে অপরাধ চোখে পড়া মাতই এখন ব্যাবস্থা নেওয়া হচ্ছে। যা অতিতের কোন সরকারের আমলে এমন নজীর সৃষ্টি হয়নি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন পদক্ষেপ দেশ-বিদেশে ব্যাপক প্রশংসা পায়। যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী ফোর্বস ম্যাগাজিনের পাশাপাশি ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামও প্রশংসা করেছেন প্রধানমন্ত্রীর এমন নেতৃত্বের। চলতি বছরের ১৫ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ডাকে দক্ষিণ এশিয়ার সার্ক জোটভুক্ত দেশের নেতারা করোনা ভাইরাস সংকট মোকাবেলার লক্ষে এক ভিডিও কনফারেন্সে মিলিত হন। করোনা সংক্রমণ ঠেকানোর লড়াইয়ে সমন্বিত উদ্যোগ নিতে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে সার্ক নেতাদের আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২৫ মে করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় সহায়তা প্রদান বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। শি জিনপিংয়ের প্রস্তাব অনুযায়ী পরে চীন বিশেষজ্ঞ দল বাংলাদেশে আসে।

৪ জুন ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে গ্লোবাল অ্যালায়েনস ফর ভ্যাকসিন অ্যান্ড ইমিউনাইজেশন (গাভি) আয়োজিত ভ্যাকসিন সামিটে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে তিনি দ্রুত ভ্যাকসিন আবিষ্কারের আহ্বান জানান এবং সংস্থাটির তহবিল বাড়াতে অনুদান দিতে বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানান। এসব অনুষ্ঠানেও ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। সার্ক জোটভুক্ত দেশের নেতাদের ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে শেখ হাসিনা করোনা মহামারির সংকটে জনগণের পাশে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যত দিন না এই সংকট কাটবে, তত দিন আমি এবং আমার সরকার আপনাদের পাশে থাকব। সরকার মানুষের জীবন-জীবিকা নিশ্চিতের জন্য কাজ করে যাচ্ছে জানিয়ে সে সময় শেখ হাসিনা বলেন, একদিকে মানুষকে বাঁচানো, আবার মানুষের খাদ্যের ব্যবস্থা, চিকিৎসার ব্যবস্থা, শিক্ষার ব্যবস্থা সেগুলো যাতে ঠিক থাকে সেদিকেও আমরা বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখছি। সে জন্য আমি দেশবাসীকে বলব, স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য যা যা নির্দেশনা সেগুলো মেনে চলে নিজের জীবনকে চালাতে হবে। করোনা সংকটের প্রথম দিকে চিকিৎসায় মারাত্মক সংকট দেখা দেয়। মাত্র ৪টি সরকারি হাসপাতালে করোনা চিকিৎসার জন্য নির্ধারণ করা হলে অনেক করোনা রোগের চিকিৎসা ব্যাহত হয়। রোগীরা দিগ্বিদিক ছুটেও চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হতে থাকে। এ অবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে এগিয়ে আসে বেশ কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতল।

এদিকে গত বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে। এসময় তিনি করোনা ভাইরাসের অভিঘাত মোকাবেলায় বাংলাদেশকে ৩২৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আর্থিক সহায়তা দেবে বলে জানান। ফোনালাপে দু’দেশের প্রধানমন্ত্রী কোভিড-১৯ মহামারি, দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং জাপানি সহায়তা বাস্তবায়নাধীন বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে কথা বলেন। এসময় দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদার করারও তাগিদ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এ ছাড়াও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সেনাবাহিনী, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন করোনা মোকাবেলায় অসামান্য ভূমিকা পালন করে এবং এখনো করে যাচ্ছে। শুধু তাই নয় দেশের বিভিন্ন জেলায় স্বেচ্ছায় নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ,যুবলীগ  ও ছাএলীগ সহ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। অবিরত খাদ্যসামগ্রীসহ নানা কর্মকাণ্ড করছে তারা।  এসব-ই হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে। শুরু থেকে এখনো পর্যন্ত নিরলসভাবে তিনি নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। করোনা রোগটি সারা বিশ্বের জন্যই নতুন। এমন ব্যাধি আর কখনো একযোগে বিশ্বকে নাড়া দেয়নি। তাই সব দেশের মতো বাংলাদেশেও এ রোগ মোকাবেলায় প্রথম দিকে হিমশিম খেতে হয়েছে। কিন্তু দমে যায়নি শেখ হাসিনা।সুনিপুণ ও শক্ত হাতে,বিজ্ঞের মত এই ভয়াবহ করোনার মধ্যেও দেশকে নিয়ে গেছে এক অনন্য উচ্চতায়।

Tags

সাবসক্রাইব করুন!

সবার আগে নিউজ পেতে সাবসক্রাইব করুন!

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন