জিহাদ হক্কানী
গাইবান্ধা প্রতিনিধি :
গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার ২নং নলডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আ'লীগের সাধারণ সম্পাদক মো। তরিকুল ইসলাম নয়নের বিরুদ্ধে অনাস্থা জানিয়েছেন নয়জন ইউপি সদস্য।
উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ লুট, ক্ষমতার অপব্যবহার ও ঘুষ-দুর্নীতিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ এনে বুধবার (৮ জুলাই) দুপুরে গাইবান্ধা জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অনাস্থা প্রস্তাব জমা দিয়েছেন ইউপি সদস্যরা। লিখিত অনাস্থায় সই করেছেন, ইউপি সদস্য জয়নাল আবেদিন, জামাল উদ্দিন, হাবিজার, আবুল, হোসেন আলী, ইয়াছিন আলি, রতন কুমার বর্মন, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য লিপি ও ইসমোতারা।
ইউপি সদস্যদের অভিযোগ, দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে চেয়ারম্যান তরিকুল ইসলাম নয়ন সরকারি বিধি না মেনে নানা অনিয়ম কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন।সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের বরাদ্দের কথা পরিষদের সদস্যকে জানালেও পরবর্তীতে ভূয়া রেজুলেশন ও সহি-স্বাক্ষর দেখিয়ে সম্প্রতি ৬ লাখ ৪৩ হাজার টাকা উত্তোলন করে আত্মসাত করেন চেয়ারম্যান তরিকুল ইসলাম নয়ন। এছাড়া এলজিএসপির বরাদ্দের অর্থে নিজ বাড়িতে হাওয়াখানা নির্মাণসহ ব্যক্তিগত প্রজেক্টে বিভিন্ন প্রকল্প বরাদ্দে দেখিয়ে বিপুল অর্থ লুটপাট করেন তিনি। পাশাপাশি করোনা দুর্যোগকালে দরিদ্রদের জন্য বরাদ্দের ত্রাণ সামগ্রী, নগদ অর্থ ও বিভিন্ন ভাতা বিতরণে ব্যাপক নয়ছয়, স্বজনপ্রীতি আর স্বেচ্ছাচারিতা করেন তিনি।
শুধু তাই নয়, এলাকার দুস্থ-অসহায় বিধবা, বয়স্ক ও প্রতিবন্দি ভাতার কার্ড মেম্বারদের মধ্যে বণ্টন না করে উল্টো সুবিধাভোগীদের কাছে টাকা আদায় করেন চেয়ারম্যান। এছাড়া হাটবাজারের অর্থ, রাজস্ব খাতের অর্থ ও ইউপি ট্যাক্স আদায়ের অর্থ দিয়ে উন্নয়নমুলক কাজ না করে সম্পন্ন আত্মসাত করেন তিনি। এসব বিষয়ে প্রতিবাদ করলে চেয়ারম্যান সদস্যদের বিভিন্ন হুমকি দেয়াসহ মারমুখী আচরণ করেন বলেও উল্লেখ করা হয়েছে অনাস্থাপত্রে। তাই চেয়ারম্যানের অপসারণসহ দ্রুত অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়গুলো খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান ইউপি সদস্যরা।
তবে ইউপি সদস্যদের এসব অভিযোগ অস্বীকার করে চেয়ারম্যান তরিকুল ইসলাম নয়ন বলেন, 'আমি ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচনে মনোনয়ন পাওয়ার পর থেকেই প্রতিপক্ষ একটি মহল আমার বিরুদ্ধে গুজব রটাতে উঠেপড়ে লেগে আছে। ওই মহলের প্রচারনায় ইউপি সদস্যরা এমন মিথ্যা ও ভিত্তিহিন অভিযোগ করেছেন। নিয়ম অনুযায়ী সরকারী প্রকল্পের বরাদ্দ পরিষদের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা ও সিদ্ধান্তে বিভিন্ন উন্নয়মুলক কাজ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এখানে কোন বরাদ্দের অর্থই আত্মসাতের ঘটনা ঘটেনি বলেও দাবি করেন তিনি'।
এদিকে, অনাস্থা জ্ঞাপনের বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা স্বীকার করে জেলা প্রশাসক আবদুল মতিন বলেন, 'ওই ইউনিয়নের মেম্বারদের দেয়া অনাস্থাপত্রের বিষয়ে সরকারি বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে'।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন